জাহাঙ্গীর আলম,টেকনাফ,কক্সবাজার।
মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে পুরোপুরি দখল নিতে দেশটির বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি ও সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই আবারও তীব্র হয়েছে। এতে করে গত তিন দিন ধরে মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ও যুদ্ধবিমান থেকেও গোলা ফেলা হচ্ছে। রাখাইন সীমান্তের ওপারে একটানা প্রচণ্ড বিস্ফোরণের টেকনাফ সীমান্তের বসবাসকারী মানুষের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে বিস্ফোরণের ধাক্কায় বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। দেয়ালধসের আশঙ্কায় সেসব ঘরের বাসিন্দারা প্রতিবেশী ও স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে থাকছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সাবরাং আচাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও হ্নীলা ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ হানিফ বলেন,মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ও যুদ্ধ বিমান থেকে ছোঁড়া গোলার বিকট শব্দে সাবরাংয়ের এপারের কেঁপে উঠছে।কিছুদিন বিরতি থাকার পরে নতুন করে এ বিস্ফোরণ হচ্ছে। এবং আমাদের গ্রামের অনেক টিনের মাটির ঘর ফাটল ধরেছে। দেয়ালধসের আশঙ্কা রয়েছে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে রাতে ঘুমাতে পারিনা এবং গ্রাম মানুষ ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
টেকনাফ জেটিঘাটের বাসিন্দা জেলে মো. আব্দুল্লাহ বলেন,মিয়ানমার সীমান্ত থেকে গত এক সপ্তাহ ধরে তেমন কোন বিস্ফোরণের শব্দ এপারে শোনা যায়নি। কিন্তু গত সোমবার রাতে, মঙ্গলবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত মর্টারশেল বিস্ফোরণ শব্দ শোনা যাচ্ছে। সে সঙ্গে দেখা গেলো রাখাইনের আকাশ সীমায় যুদ্ধ বিমান উড়ছে। এবং ওই যুদ্ধ বিমান থেকে ছোড়া হচ্ছে গোলা। আবার বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত তীব্র হামলার বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। এমন ঘটনায় আমরা ভয়ে ও আতঙ্কের মধ্যেই সীমান্তে বসবাস করছি।
সীমান্তের একাধিক সূত্রে জানা গেছে,মিয়ানমারের রাখাইন সীমান্তের ওপারে মর্টার শেল ও যুদ্ধ বিমান থেকে ছোঁড়া গোলার বিস্ফোরণে কাঁপছে টেকনাফ উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন সাবরাং, সদর ও হ্নীলা। এসব বিস্ফোরণে এই ইউনিয়নের বাসিন্দারা ভয়ে ও আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, আতঙ্কে সীমান্তবতী গ্রামের মানুষজন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। তাঁদের নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বলা হচ্ছে। রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফনদী ও সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সতর্ক আছে।ইউএনও আরও বলেন, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানায়।
পাঠকের মতামত